জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন গত ২ আগষ্ট দুপুরে রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিলো খুলনার রাজপথ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌছালে বিপরীত থেকে মুহুর্মুহু রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছোড়া শুরু করে পুলিশ। আর সেই গুলিতেই, ক্ষতবিক্ষত হয় নর্দান ইউনিভার্সিটি বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ শাফিলের শরীর।
খুলনা, ঢাকার একাধিক হাসপাতাল, সিএমএইচ ও চক্ষু ইনস্টিটিউটেও চিকিৎসা নিয়েছেন শাফিল। সহযোদ্ধারা তাকে থাইল্যান্ডেও চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু বাম চোখে আর আলো ফিরে আসেনি। এখন সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে তার। এজন্য প্রয়োজন ৫০/৬০ লাখ টাকা। কিন্তু অর্থাভাবে সেই কাজ স্থবির হয়ে আছে।
শাফিল জানান, ধাতব গুলিটি শাফিলের চোখের কর্নিয়া ভেদ করে রেটিনার পেছনের অংশে গিয়ে বিদ্ধ হয়েছে। গুলিটি এখনও সেখানে রয়েছে। রেটিনার অংশটি চোখ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চোখের আলো ফিরে পাননি তিনি।
শাফিন খুলনা গেজেটকে বলেন, সব চিকিৎসক তাকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর সরকারের অনেক জায়গায় আমি দারস্থ হই, কিন্তু সরকারের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ভিক্ষুকের চেয়েও নির্মমভাবে আমাকে ঘুরানো হইছে। তারা আমাকে এখনও দেশের বাইরে পাঠায়নি। তাদের পিছনে কিছুদিন ঘোরার পর দেশ এবং বিদেশের আমার কিছু ভাই, বন্ধু ও সাংবাদিকদের সহায়তায় কিছু টাকা নিয়ে থাইল্যান্ডে যাই। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা
ব্যর্থ্য হয়েছেন।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে সহায়তা প্রসঙ্গে শাফিল বলেন, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সিএমএইচ ব্যতীত অন্য কোথাও আমার চিকিৎসা হয়নি। যেসকল জায়গাতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলাম যেখানেই আমার ব্যক্তিগত অর্থায়নে চিকিৎসা চালাতে হয়েছে।
এবিষয়ে শাফিলের মা বলেন, আজ ১০০ দিনের বেশি আমার ছেলেটা বিনা চিকিৎসায় ভুগছে। ওর জীবনে অনেক স্বপ্ন, সে লেখাপড়া করবে, রিসার্চ করবে। ওর আজকে পড়ার টেবিলে থাকার কথা, আজ ওকে নিয়ে আমি সরকারের দারে দারে ঘুরছি। কিন্তু এখনও ওর চিকিৎসা করাতে পারিনি। সরকারের কাছে আমার আবেদন ও যেন সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে যা যা করা প্রয়োজন, সরকার যেন তার ব্যবস্থা করে।
খুলনা গেজেট/এএজে